- স্যানিটারি প্যাড/স্যানিটারি ন্যাপকিন কি ?(meaning of sanitary napkin)-স্যানিটারি ন্যাপকিন কি পুনব্যবহার যোগ্য? (are sanitary napkins recyclable)
বিংশ শতাব্দীর দোর গোড়ায় দাঁড়িয়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন, ( sanitary napkin ) স্যানিটারি প্যাড,(sanitary pad ) প্যাড (pad) সম্পর্কে জানে না এমন মানুষ বোধয় নেই তাই না ,নাহ এটা অর্ধেক সত্যি , পুরো সত্যি তো এটাই আজও প্রত্যন্ত গ্রামের কিছুসংখ্যক মহিলারা এই প্যাড ,বা স্যানিটারি ন্যাপকিন সম্পর্কে কোনো ধারণাই রাখে না , আজও মাসিকসময়ে বা পিরিয়ড(period) চলা কালীন ব্যাবহার করে ন্যাকড়া ছেঁড়া , বা পুরানো কাপড়ের টুকরো ,
এখন প্রশ্ন আসবে আজকাল তো শোনা যায় নামি দামি ব্র্যান্ড এর স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যাবহার করেও বাড়তে পারে ওভারিয়ান ক্যান্সার বা জরায়ু ক্যান্সারের এর ঝুঁকি , তাহলে সুরক্ষার গ্যারান্টি কোথায় ?
আসলে সমস্যা টা প্যাড বা ন্যাকড়া ছেঁড়া র নয় সমস্যা টা ঘটে ব্যাবহারের পদ্ধতিতে , আমাদের সচেতনতার অভাবে ।
পরিস্কার ন্যাকড়া ও ব্যাবহার করা যেতে পারে যদি সেটা একবার ব্যাবহার করে ফেলে দেওয়া যায় । কিন্তু আমাদের দেশে ঘটে ঠিক উল্টোটাই ,প্রত্যন্ত গ্রামের মহিলারা একটা ন্যাকড়া কে ব্যাবহার করার পর সেটা ফেলে না দিয়ে আবার ধুয়ে শুকিয়ে রেখে মাসের পর মাস ব্যাবহার করেন , যেটা কিনা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভয়ঙ্কর । আর সমীক্ষায় দেখা গেছে বর্তমান সময়ে ন্যাকড়া ব্যাবহার কারীর নব্বই শতাংশই অসচ্ছল পরিবারের এবং যাদের পুঁথিগত শিক্ষাকম বা নেই বললেই চলে ,এবং প্রতিমাসে তিন থেকে চারদিনের পিরিয়ড এ যে পরিমান কাপড় লাগে তা প্রায় অর্ধেক থেকে একটা গোটা কাপড়ের সমান , পুরোনো কাপড় হলেও প্রতি মাসে একটা কাপড় ব্যাবহার করে ফেলে দিয়ে পরের মাসে আরো একটা কাপড় এর যোগান দেওয়া অসম্ভব একটা আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পরা পরিবারের ক্ষেত্রে ।
একটা ন্যাকড়া কে পুনরায় ব্যাবহারের জন্যে তাকে প্রথমে নোংরা রক্ত ধুয়ে ডিটারজেন্ট এ ভিজিয়ে রাখতে হবে খানিকক্ষণ ,তারপর তাকে কেচে ধুয়ে ফুটন্ত জলে চুবিয়ে রাখতে হবে ,সব শেষে ডেটল বা জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে ভালোভাবে শুখিয়ে নিতে হয় , যার কোনোটাই করে থাকেন না ব্যাবহারকারীরা একটা কাপড় কে পুনরায় ব্যাবহার যোগ্য করে তুলতে ।
প্যাড ব্যাবহার করেও বাড়ছে জরায়ু ক্যান্সার কিন্তু সেক্ষেত্রেও সঠিক পদ্ধতি তে প্যাড ব্যাবহার করলে এই ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব , এই বিষয়ে আলোচনার পূর্বে প্যাড বা স্যানিটারি ন্যাপকিন সমন্ধে জেনে নেব কিছু প্রাথমিক তথ্য
- স্যানিটারি ন্যাপকিন কি ?(meaning of sanitary napkin)
স্যানিটারি ন্যাপকিন হলো একটি লম্বাটে চৌকো ধরণের চ্যাপ্টা অথচ অল্প স্ফীত তুলো ও টিস্যু দ্বারা প্রস্তুত জলিও শুষে নেবার উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বস্তুবিশেষ যা নারী শরীরের যোনিপথ দিয়ে প্রবাহিত মাসিক রক্তের স্রোত কে শুষে নেয় ।
- স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরি তে ব্যাবহৃত কাঁচামাল (what are sanitary napkin made of )
স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রুস্তুতে প্রধান উপাদান বা সামগ্রী হলো তুলো ,এছাড়াও ন্যাপকিন প্রুস্তুতে টিস্যু ,সুগন্ধি ,আঠা ,পেপার ইত্যাদির ব্যাবহার করা হয়।
- স্যানিটারি ন্যাপকিন এর কি মেয়াদ উতীর্ণ হতে পারে ? (Do sanitary napkins have an expiry date )
একেকটি স্যানিটারি ন্যাপকিন প্যাকেট তৈরির তারিখ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ দু বৎসর পর্যন্ত ব্যাবহার এর উপযোগী থাকে , তার পর সেটি ব্যাবহারের অনুপযোগী হয়ে যায়।
- স্যানিটারি ন্যাপকিন কি পুনব্যবহার যোগ্য? (are sanitary napkin recyclable)
স্যানিটারি ন্যাপকিন বা প্যাড আজও অবধি পুনর্বাবহার যোগ্য করে তোলা যায় নি ,তবে এ নিয়ে গবেষণা চলছে।◆স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্র্যান্ড (sanitary napkin brands) :-
আমাদের দেশে বর্তমানে প্রায় খান দশেকের বেশি স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রুস্তুত কোম্পানি ব্যাবসা করছে ,তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য - whisper ,steyfree , sofy ,she, don't worry ,cotex ইত্যাদি ।
◆স্যানিটারি ন্যাপকিন অনলাইন (sanitary napkin online )
বর্তমানে বাড়ি বসে পেয়ে যেতে পারেন আপনার পছন্দের স্যানিটারি ন্যাপকিন টি amazon, snapdeal, অথবা flipkart এর মাধ্যমে ।
◆ স্যানিটারি ন্যাপকিন এর দাম (price of sanitary napkins ) :-
~ বর্তমানে ন্যাপকিন বা প্যাড এর সাইজ , মেটেরিয়াল ,শোষণ ক্ষমতা ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিভিন্ন দামের হয় |
,ছটা ন্যাপকিন একত্রে প্যাকেট করা ন্যাপকিন এর দাম সর্বনিম্ন কুড়ি টাকা থেকে শুরু করে চল্লিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ অবধি পাওয়া যায় ,এবং তার থেকে বড় প্যাকেট কিনতে চাইলে কুড়ি টা বা তিরিশটা একত্রে পাওয়া যায় দেড়শ থেকে দুশো টাকার মধ্যে।
★ দুটি উদাহরণ দেওয়া হলো :
Whisper ultra soft - (6 pcs packet )
Price - 45 rs (in india)
Stayfree cottony soft -(20pcs packet)- price -120 rs
(in india)
◆প্যাড ব্যাবহারের নিয়ম -
বর্তমানে শোনা যাচ্ছে প্যাড বা স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যাবহার করেও বাড়ছে জরায়ু ক্যান্সার এর ঝুঁকি, এমনকি ন্যাপকিন সঠিক ভাবে ব্যাবহার না করলে রয়েছে বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকিও ।
প্যাড ব্যাবহার তো করি অনেকেই কিন্তু সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করি কজন ?
স্যানিটারি প্যাড গুলিতে রক্তের জলিও ভাব কে জেল এ পরিণত করা হচ্ছে এর জন্য ব্যবহৃত সেলুলোজ নামক জেল টি আমাদের যোনিপথ বা জরায়ুর ক্যান্সার এর জন্যে দায়ী , কিন্তু সঠিক পদ্ধতিতে প্যাড এর ব্যবহার এড়াতে পারে এইসমস্ত ঝুঁকি ,
১)প্রত্যেক বার প্যাড ব্যাবহারে পূর্বে অর্থাৎ প্যান্টি তে প্যাড লাগানোর পূর্বে নিশ্চিত হয়ে নিন প্যান্টি টি সম্পূর্ণরূপে শুকনো এবং জীবাণুমুক্ত ,
২)শুধু প্যাড লাগানোর পরেই নয় প্যাড লাগানোর আগেও হাত ভালোভাবে সাবান বা জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে ।
৩) প্রতি চার ঘণ্টা অন্তর প্যাড বদলানো আবশ্যিক , তা সে প্যাড সম্পূর্ণ রূপে ভিজুক আর নাই ভিজুক ।
৪)ঋতুস্রাব ,মাসিকচক্র বা পিরিয়ড এর ওই দিন গুলিতে শুধুমাত্র হাত বা প্যান্টি পরিস্কার রাখাই যথার্থ নয় , প্রত্যেক বার টয়লেট যাওয়া কালীন,অথবা ন্যাপকিন বদলানোর সময় ,স্নানের সময় ,যোনিপথ ভালোভাবে উষ্ণ গরম জল দিয়ে বা জীবাণুনাশক(v wash plus ) দিয়ে ধুয়ে শুকনো করে মুছে তবেই ন্যাপকিন পুনরায় ব্যাবহার করতে হবে ।
আশা করি আজকের ব্লগ আপনাদের হেল্পফুল লেগেছে , ভালো লাগলে আপন জনেদের সাথে শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন ।
#lets spread awareness
ফিরে আসবো নতুন কোনো ব্লগ নিয়ে ।
সুস্থ থাকুন ,সুস্থ রাখুন ,সঙ্গে থাকুন ।
ConversionConversion EmoticonEmoticon